- November 3, 2020
- Posted by: aminul
- Categories: Entrepreneurship, Legal Documentation
উদ্যোক্তা বান্ধব, ট্রেড লাইসেন্স !!
একদিন এক আলোচনায় একজন উদ্যোক্তা জানতে চাইলেন যে, বর্তমানে ব্যবসায়ীদের জন্য যে ট্রেড লাইসেন্সিং ব্যবস্থা রয়েছে সেটি আসলে কতটা উদ্যোক্তা বান্ধব । আমরা যখন থেকে কাজ করা শুরু করেছি তখন থেকে দেখে এসেছি ট্রেড লাইসেন্স ব্যবসা যথেষ্ট উদ্যোক্তা বান্ধব এবং সেটি নানা প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে প্রতিনিয়ত আপডেট এবং আরো উদ্যোক্তা বান্ধব করার চেষ্টা করা হচ্ছে । তবে বর্তমান ট্রেড লাইসেন্সিং প্রক্রিয়াকে আরো উদ্যোক্তা বান্ধব বানানোর জন্য কিছু পদক্ষেপ অবশ্যই নেয়া সম্ভব । আর সেগুলো হলো :
ট্রেড লাইসেন্স ফি এর ক্ষেত্রে পর্যায় / সিলিং এর ব্যবস্থা করা :
আমরা বাংলাদেশের ব্যবসার লাইসেনন্সিং প্রক্রিয়ার দিকে তাকালে দেখবো যে বিভিন্ন লাইসেনন্সিং এর ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে বিভিন্ন পর্যায়/ সিলিং এর ব্যবস্থা করা আছে যেমন: লিমিটেড কোম্পানী রেজিষ্ট্রেশন, আমদানী-রফতানী লাইসেন্স তৈরী, আয়কর প্রদান ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য । এছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংক এসএমই সেক্টরকেও ৪টি পর্যায়ে বিভক্ত করেছেন তাদের নানাবিধ সুবিধা প্রদান এর ক্ষেত্রে , যেমন কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারী । কিন্তু ট্রেড লাইসেন্স ফি প্রদানের ক্ষেত্রে বা তৈরীর ক্ষেত্রে এমন কোন ধরনের পর্যায় /সিলিং বা সুবিধা নেই ।
যদি এমএমইদের জন্য ট্রেড লাইসেন্স এর বিভিন্ন পর্যায় অথবা শুধুমাত্র এসএমই সেক্টর এর জন্য আলাদা একটি ভাগ/সিলিং করা যেত তাহলে এসএমই উদ্যোক্তারা আরো বেশি ব্যবসা এবং ট্রেড লাইসেন্স তৈরীতে এগিয়ে আসতো বলে আমার ধারনা ।
ক্যাটাগরী নির্ধারন :
আমরা করোনার আগে তো দেখেছিই করোনাকালীন সময়েও দেখতে পাচ্ছি যে, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের ই-কমার্স সেক্টরে অনেক উদ্যোক্তা/ব্যবসায়ীরা আসছেন নতুন নতুন উদ্যোগ নিয়ে । কিন্তু ট্রেড লাইসেন্স এর গেজেটে ই-কমার্স ক্যাটাগরীটা এখনও পর্যন্ত অন্তুভুক্ত না হওয়ার কারনে অনেক একমালিকানা এবং যৌথ উদ্যোক্তা ব্যবসায়ীরা তারার ই-কমার্স ক্যাটাগরী দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স করতে পারছেন না ফলে তারা অনেক ক্ষেত্রেই অনেক অসুবিধার সম্মুখিন হচ্ছেন । এক্ষেত্রে ই-কমার্স, এফ-কমার্স ক্যাটাগরীসহ অন্যান্য আরো প্রয়োজনীয় ক্যাটাগরী এ্যাড করা গেলে উদ্যোক্তাদের জন্য এটি আরো উদ্যোক্তা বান্ধব হবে বলে আমার বিশ্বাস ।
কমার্শিয়াল / ব্যবসায়ীক ঠিকানা :
করোনাকালীন সময়ে অনেক উদ্যোক্তা/ব্যবসায়ী তৈরী হয়েছে যারা খুব ছোট পরিসরে ব্যবসা পরিচালনা করছেন এবং সেটি বাসা থেকে কিন্তু ট্রেড লাইসেন্স করার জন্য ঢাকা উত্তর এবং ঢাকা দক্ষিন সিটি করপোরেশন এর অধিনে ট্রেড লাইসেন্স করতে গেলে যেহেতু একটি কমার্শিয়াল / ব্যবসায়িক ঠিকানা প্রয়োজন হয় তাই অনেক কুটির/ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ট্রেড লাইসেন্স করতে অনেক কষ্ট করতে হয় । এক্ষেত্রে যদি আমরা ট্রেড লাইসেন্স করার ক্ষেত্রে একটি পর্যায়/ সিলিং ( নির্দিষ্ট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য) কে আবাসিক এলাকায় ট্রেড লাইসেন্স করার অনুমতি দেয়া যায় তাহলে উদ্যোক্তাদের জন্য এটি অনেক উপকারে আসবে বলে আমার বিশ্বাস ।
সর্বত্র ই-ট্রেড লাইসেন্স এর ব্যবস্থা করা :
আমরা জানি যে, ঢাকা দক্ষিন সিটি করপোরেশন এবং কুমিল্লা সিটি করপোরেশন ইতিমধ্যে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ই-ট্রেড লাইসেন্স এর কার্যক্রম শুরু করেছে । যদি এই কার্যক্রমকে স্থায়ীভাবে স্থানীয় সরকার বিভাগ এর সকল ট্রেড লাইসেন্স অথরীটির মাধ্যমে সারা বাংলাদেশে ই-ট্রেড লাইসেন্স এর আওতায় আনা যায় তাহলে । ব্যবসায়ীরা যেমন লাভবান হবে ঠিক তেমনি সরকারও সঠিক তথ্য/উপাত্ত এর মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের সহযোগীতা করতে পারবে ।
হেল্পলাইন নম্বর/ ইমেইল/কল সেন্টার এর ব্যবস্থা করা :
বাংলাদেশে বিভিন্ন পর্যায়ে , বাংলাদেশের জনগনকে সহযোগীতা করার জন্য বিভিন্ন হেল্পলাইন নম্বর আছে যেমন: ৯৯৯, ৩৩৩ ইত্যাদি । ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট হলো ট্রেড লাইসেন্স এই ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসায়ীদের অনেক সময় অনেক তথ্য প্রয়োজন হয় আবার অনেক সময় অনেক বিষয়ে সহযোগীতারও প্রয়োজন হয় । সেক্ষেত্রে যদি একটি কেন্দ্রিয় ৩ ডিজিট এর ডেডিকেটেড নম্বর অথবা একটি ইমেইল অথবা একটি কল সেন্টার এর ব্যবস্থা করা যায় তাহলে ব্যবসায়ীরা অনেক উপকৃত হবেন ।
মো: আমিনুল ইসলাম ।
ফাউন্ডার ও সিইও
শাহিন’স হেল্পলাইন