- April 20, 2017
- Posted by: aminul
- Category: Uncategorized
No Comments
আমাদের দেশে বর্তমানে তরুনদের মাঝে উদ্যোক্তা তৈরী হবার যে ইচ্ছা, আগ্রহ এবং একাগ্রতা দেখা যাচ্ছে তা সত্যিই আশাব্যঞ্জক, কিন্তু এই আশাটাই আবার কর্পূরের মতো মুহুর্তেই উড়ে গিয়ে হতাশার জন্ম দেয় যখন একের পর এক তরুন নিজেদের উদ্যোগগুলোতে নিজেদের আশা, অর্থ, স্বপ্নগুলো হারিয়ে হতাশ হয়ে চাকরী খোজা শূরু করেন বা নিজেদের আতœবিশ্বাস হারিয়ে পথে পথে ঘুরে বেড়ান নতুন পথের সন্ধানে ।
একটি উদ্যোগ সফল না হবার পিছনে অনেক কারন খুজে পাওয়া যাবে তবে বিশেষভাবে লক্ষ্যনীয় কারনগুলোর মধ্যে রয়েছে :
উল্টো দিক থেকে উদ্যোগ শুরু করা: আমাদের দেশের তরুনেরা তাদের উদ্যোগটা শুরুই করেন মস্তবড় ভূল দিয়ে এবং উল্টাভাবে । পৃথিবীর সর্বত্তই যেকোন উদ্যোগ শুরু করার আগে একটি পরিকল্পনা করা হয়, যেখানে একটি গুরুত্বপূর্ন অংশ হচ্ছে থাকে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা । এর পর অর্থনৈতিক পরিকল্পনা অনুযায়ী অর্থ সংগ্রহ করা হয় সেই উদ্যোগ এর জন্য কিন্তু আমাদের দেশের উদ্যোক্তারা শুরু করেন ঠিক উল্টোভাবে নিজের হাতে যে সঞ্চয় বা উদ্বৃত্ত টাকা থাকে সেই টাকা দিয়েই তারা তাদের উদ্যোগ শুরু করতে চান । একজন উদ্যোক্তার সঞ্চয় বা উদ্বৃত্ত টাকা এবং একটি উদ্যোদের প্রয়োজনীয় টাকা কোনভাবেই সমান হতে পারে না । হয় সেই সঞ্চয় বা উদ্বৃত্ত টাকা সেই উদ্যোগের চেয়ে বেশি হবে না হয় কম হবে। যদি উদ্যোক্তার সঞ্চয় বা উদ্বৃত্ত টাকা সেই উদ্যোগের চেয়ে বেশি হয় তাহলে স্বাভাবিক ভাবেই নতুন উদ্যোক্তা হিসাবে তিনি এমন কিছু খরচ করে ফেলবে যে, তার লভ্যাংশ ফেরত আসতে সময় লাগবে আবার সঞ্চয় বা উদ্বৃত্ত টাকা যদি সেই উদ্যোদের চেয়ে কম হয় তাহলে পর্যাপ্ত মূলধনের অভাবে উদ্যেগ ভালভাবে চালাতে পারবেন না । ফলে উভয় পরিবেশেই একজন নতুন উদ্যোক্তার জন্য অনুকুল নয় ।
অন্যের আইডিয়া দিয়ে ব্যবসা শুরু করা: একজন উদ্যোক্তার উদ্যোগ এর সফলতা নির্ভর করে তার নিজের শিক্ষা, জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, নৈতিকতা, একাগ্রতা, ইত্যাদির উপর । একজন উদ্যোক্তাই ভাল জানে তার শিক্ষা, জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, নৈতিকতা, একাগ্রতা, ইত্যাদি বিষয়ে অন্য কারো পক্ষে কিন্তু এই বিষয়গুলো জানা সম্ভব হয় না । আমাদের এখানে অনেকেই উদ্যোগ শুরু করবার আগে অন্যের কাছ থেকে আইডিয়া খুজতে থাকে আর না হয় অন্যের সফল হওয়া উদ্যোগকে অনুসরন করে শুরু করেন তার নিজের উদ্যোগ, যার ফলাফল বেশির ভাগ সময়ই ভাল না এর কারন একজন নতুন উদ্যোক্তা অন্যের কাছ থেকে আইডিয়া নিয়ে বা অন্যকে অনুসরন করে যে উদ্যোগ শুরু করেছেন তার সাথে তার নিজের শিক্ষা, জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, নৈতিকতা, একাগ্রতার কোন/বেশির ভাগেরই মিল থাকে না ফলে কিছুদিনের মধ্যেই তার উদ্যোগ এ নানা সমস্যাসহ ক্ষতি হতে শুরু করে যার ফলাফল এক পর্যায়ে উদ্যোক্তা তার উদ্যোগটা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন । অন্যের কাছ থেকে আউডিয়া নেয়া বা অন্যের উদ্যোগকে অনুসরন করে উদ্যোগ শুরু করার মধ্যে কোন ভুল বা অপরাধ নেই তবে অবশ্যই সেটা যাতে উদ্যোক্তার শিক্ষা, জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, নৈতিকতা, একাগ্রতা, ইত্যাদির উপর ভিত্তী করে রচিত হয় সেটা অবশ্যই খেয়াল রাখা দরকার । সবচেয়ে উত্তম নিজে নিজের শিক্ষা, জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, নৈতিকতা, একাগ্রতা, ইত্যাদিও উপর নির্ভর করে উদ্যোগ এর চিন্তা করা এবং তারপর অভিজ্ঞ এবং অন্যদের সাথে সেটা করা যাতে করে সেই চিন্তার মধ্যেকার ভুলগুলো শুদ্ধ করা যায় ।
পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ছাড়াই উদ্যোগ শুরু করা: এখন অনেক উদ্যোগাকেই দেখা যায় যে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ছাড়াই উদ্যোগ শুরু করেন ফলে যথার্থ প্রস্তুতির অভাবে উদ্যোগটি আর সফলতার মুখ দেখতে পারে না । এমন অনেক পোস্ট আমরা ফেইজবুক এ দেখতে পাই যে “আমি/আমরা ই কমার্স ব্যবসার জন্য একটি ওয়েব সাইট ডিজাইন করেছি কিন্তু প্রোডাক্ট কোথা থেকে সংগ্রহ করবো বুঝতে পারছি না” । সহজভাবে বলতে গেলে, একটি উদ্যোগ শুরু করার আগে কয়েকটি ধাপে প্রস্তুতি নেয়া উচিত ।
– বাজার সম্ভাব্যতা যাচাই : যে উদ্যোগটা গ্রহণ করতে যাচ্ছেন সেটার বাজারে কি পরিমান চাহিদা রয়েছে অথবা বর্তমান বাজারে উদ্যোগটি কতটুকু যুগোপোযুগি তা যাচ্ইা করে দেখা ।
– ব্যবসার পরিকল্পনা তৈরী করা: যে উদ্যোটিই গ্রহণ করতে যাচ্ছেন সেই উদ্যোগটির জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরী করা
– বাজার সম্ভাব্যতা যাচাই : যে উদ্যোগটা গ্রহণ করতে যাচ্ছেন সেটার বাজারে কি পরিমান চাহিদা রয়েছে অথবা বর্তমান বাজারে উদ্যোগটি কতটুকু যুগোপোযুগি তা যাচ্ইা করে দেখা ।
– ব্যবসার পরিকল্পনা তৈরী করা: যে উদ্যোটিই গ্রহণ করতে যাচ্ছেন সেই উদ্যোগটির জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরী করা
পর্রিকল্পনাটি কয়েকটি ধাপে হতে পারে যেমন:
# বিপণন পরিকল্পনা;
# উৎপাদন পরিকল্পনা;
# ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা; এবং
# আর্থিক পরিকল্পনা ।
# বিপণন পরিকল্পনা;
# উৎপাদন পরিকল্পনা;
# ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা; এবং
# আর্থিক পরিকল্পনা ।
– উদ্যোগ এর জন্য প্রয়োজনীয় অথ সংগ্রহ করা: ব্যাবসা পরিকল্পনা অনুযায়ী যে পরিমান অর্থ প্রয়োজন তা সংগ্রহ করা
– উদ্যোগটি শুরু করা এবং চালিয়ে যাওয়া: উদ্যোগটি পরিকল্পনা অনুযায়ী শুরু করা এবং চালিয়ে যাওয়া । ব্যবসা পরিকল্পনা যে কোন সময়ই পরিকল্পনা পরিবর্তন করা যাবে তবে যতো কম পরিবর্তন করা যায় ততোই ভাল কারন পরিকল্পনার একটি ধাপ আরেকটি ধাপের সাথে সংযুক্ত তাই একটি পরিবর্তন এর ফলে সবগুলো ধাপেই এর প্রভাব পড়বে । সবচাইতে ভাল আপনি উদ্যোগটি শুরু করার আগে পরিকল্পনাটি বার বার সংশোধন করে তারপর উদ্যোগটি বাস্তবায়ন শুরু করা ।