একটি বক্তব্য এবং অনেকগুলো কৌশল

১.    নিজে ভাল করে বিষয়টি সর্ম্পকে জানা  ।
২.    অংশগ্রহনকারী কারা তাদের সর্ম্পকে তথ্য সংগ্রহ করা ( কারা থাকবেন, বয়স, কাজ, পেশা ইত্যাদি জানা ) ।
৩.    সময় বিভাজন করা :   আপনি যেখানে যতো কম সময় বা যতো বেশি সময় নিয়েই করেন না কেন আপনি যদি নিচের ছক অনুযায়ী আপনার বক্তব্যের সময়টুকু বিভাজন করে নেন তাহলে আপনি আপনার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যেমন বক্তব্য শেষ করতে পারবেন তেমনি আপনি আপনার একটি পরিপূর্ণ বক্তব্য রাখতে পারবেন । একটি পরিপূর্ণ বক্তব্য যেমন শ্রোতা শুনতে পছন্দ করেন ঠিক তেমনি অনুষ্ঠানের মাধুর্য অনেক বাড়িয়ে তোলে । সবচেয়ে বড় বিষয় হলো একজন বক্তা একটি পরিপূর্ণ বক্তব্য রাখার পর নিচে অনেক পরিতৃপ্তি লাভ করে যা তার আতœবিশ^াস অনেক বাড়িয়ে দেয় যা পরবর্তীতে আরো ভাল বক্তব্য রাখতে অনুপ্রেরনা হিসাবে কাজ করবে ।

৪.    জড়তা বিমোচন : অংশগ্রহনকারীদের সাথে বক্তব্যের শুরুতেই যোগাযোগ তৈরী করা । অংশগ্রহণকারীদের সাথে যতো তাড়াতাড়ি এবং যতো মজবুতভাকে আপনি যোগাযোগ তৈরী করতে পারবেন আপনার বক্তব্য ততো বেশি মনোযোগ দিয়ে অংশগ্রহণকারীরা শুনবে । যোগাযোগ যতো দুর্বল হবে আপনার বক্তব্য ততো বেশি বিরক্তিকর মনে হবে অংশগ্রহনকারীদের কাছে ।
৫.    নিচের  ছক অনুযায়ী মুল বক্তব্যের প্র¯তুতি নেয়া (Main Speech)

SMLXL

–    জানাতে হবে : জানতে হবে বলতে এখানে আসলে বোঝানো হয়েছে যে, যে বিষয়গুলো অংশগ্রহণকারীদের অবশ্যই জানতে হবে ( ইধংরপ রহভড়ৎসধঃরড়হ) । অংশগ্রহণকারীরা আপনার কাছ থেকে জানার জন্য অপেক্ষা করছে । একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যে, আপনাকে যখন বক্তব্য রাখার জন্য আমন্ত্রন জানানো হয়েছে তার মানে, আপনার কাছ থেকে অবশ্যই অংশগ্রহণকারীরা এবং আয়োজকরা আশা করেন যে আপনার কাছ থেকে অবশ্যই জানার কিছু আছে এখানে অবশ্যই আপনাকে সেই ভুমিকায় অবতীর্ন হতে হবে অন্যথায় আপনার কনফিডেন্স লেভেল কমে যাবে । যা আপনার বক্তব্যের সৌন্দর্যকে নষ্ট করে দিতে পারে ।
–    জানালে ভাল: মুল বক্তব্য বলা শেষ হলে এর পর প্রাসঙ্গিক আরো কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে আপনার মুল বক্তব্যকে বুঝতে এবং মনে রাখতে সহযোগীতা করবে ।  এটা অনেকটা কেকের ডেকোরেশন এর মতো কাজ করে, মুল কেক এর অংশ বানানোর পর এটাকে সুন্দর ডেকেরেশন করা হয় যাতে এটা দেখতে সুন্দর হয় এবং এটার খাওয়ার জন্য একটি লোভ কাজ করে ঠিক তেমনি জানলে ভাল এ বিষয়ে অতিরিক্ত যে বিষয়গুলো আলোচনা করা হয় তা মুল বিষয়কে মনে রাখতে সহযোগীতা করে ।
–    জানলে ক্ষতি নেই : এটা হচ্ছে কেক এর সাথে একটি মোমবাতির মতো । যা কেকটিকে পরিপূর্ণ হতে সাহায্য করে । বক্তব্যের এ অংশটি ঠিক তাই এ অংশে যেটুকুই আলোচনা করা হবে তা বক্তব্যকে আরো বেশি করে পরিপূর্ণ করে তুলবে । এখন হয়তো মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, সব সময়ই কি কেক এর সাথে মোমবাতি অনিবার্য । অবশ্যই না ।  সাধারনত জন্মদিনের সময়ই যেহেতু মোমাবাতিতে ফু দিয়ে কেক কেটে জন্মদিন পালন করা হয় এটা একটি প্রচলিত রীতি । জন্মদিন ছাড়াই অনেক সময় আমরা নানা ধরনের কেক ব্যবহার করে থাকি যেখানে মোমবাতির কোন ভুমিকা নেই । ঠিক তেমনি বক্তব্য রাখার আগে আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে আপনি যে বক্তব্যটি যে অনুষ্ঠানে রাখবেন সেটা কি জন্মদিনের অনুষ্ঠান মানে জন্মদিনের কেক নাকি সাধারন কোন অনুষ্ঠান মানে মোমবাতি ছাড়া কোন কেক খাওয়ার অনুষ্ঠান ।
৬.    নোট : সুন্দর পরিচ্ছন্ন বক্তব্য রাখার জন্য প্রয়োজন হলে হাতের কাছে নোট রাখতে পারেন । তবে চেষ্টা করা উচিত নোট না নিয়েই বক্তব্য রাখার । কিন্তু নোটও রাখলাম না আবার আমি যে বিষয়টি বলতে চাচ্ছি সেটা মনেও করতে পারছি না এমন না হওয়াই বাঞ্চনিয় । তাই প্রয়োজন হলে অবশ্যই নোট রাখতে হবে ।
৭.    আপনার বক্তব্যের মধ্যে নতুন কিছু শব্দ ব্যবহারের চেষ্টা করুন । তবে যেটার অর্থ যাতে সবাই বুঝতে পারে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে ।
৮.    এমন কিছু তথ্য উপাত্ত ব্যবহার করুন, যা সহজে বোধগম্য এবং বিশ^াসযোগ্য হয়, যাতে করে অংশগ্রহণকারীরা আপনার বক্তব্যকে যথার্থ এবং গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন । যেদিন বক্তব্য দিবেন সেদিনকার পত্রিকা বা ম্যাগাজিন থেকে তথ্য সংগ্রহ করা যেতে পারে ।
৯.    নিজের উদাহরন যতোদুর সম্ভব কম ব্যবহার করবেন ।  দুই একটি সফলতা/চ্যালেη/শিক্ষনীয় ঘটনার কথা বলা যেতে পারে ।
১০.    বক্তব্য রাখার সময় অবশ্যই এমনভাবে বক্তব্য রাখতে হবে যাতে সকল অংশগ্রহণকারীরা মনে করেন যে তাদের সকলের উদ্দেশ্য করে আপনি বক্তব্য রাখছেন । কোন বিশেষ অংশগ্রহনকারী/দের দিকে লক্ষ করে বা বিশেষ দিকে তাকিয়ে বক্তব্য না দেয়া ভাল ।
১১.     সম্ভাষন এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন : বক্তব্যের শুরুতে এবং শেষে অবশ্যই উপস্থিত অতিথি এবং অংশগ্রহণকারীদের সম্ভাষন এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা ভাল তবে সেটা যতো  ছোট হয় ততোই ভাল । তবে খেয়াল রাখতে হবে আপনি যে সম্ভাষন এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করলেন  তার মধ্যে কোন অতিথি বা অংশগ্রহণকারী বাদ না পড়ে তাহলে আবার অনেকে এটাকে ভাল চোখে দেখতে নাও পারে ।
১২.    যেভাবেই হোক আপনি আপনার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বক্তব্য শেষ করার চেষ্টা করুন ।
এছাড়াও প্রত্যেক বক্তার তার নিজ নিজ কৌশল রয়েছে বক্তব্য উপস্থাপন করার ক্ষেত্রে । এখানে আমরা বক্তব্য প্রস্ততির জন্য একটি ধারনা দেবার চেষ্টা করেছি মাত্র । বিশেষ করে যারা নতুন, নতুন বিভিন্ন জায়গায় বক্তব্য রাখছেন বা রাখার প্রয়োজন হয়ে পড়ছে ।




Leave a Reply